শরীয়তপুর পোর্টাল

শরীয়তপুর জেলার সাধারণ তথ্য পোর্টাল
Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Latest Post

শরীয়তপুর জেলার নামকরণের ইতিহাস

Written By শরীয়তপুর পোর্টাল on বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৫ | ৮:৪২ AM

হাজী শরীয়তউল্রাহ
------------------------
শরীয়তপুর জেলার নামকরণ করা হয় এ মহামনিষীর নামানুসারে
.............................................................................................................
বাংলার একজন ইসলামি সংস্কারক। তাঁর নামানুসারে শরিয়তপুর জেলার নামকরণ করা হয়েছে। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন মাদারীপুর মহকুমাধীন (বর্তমানে জেলা) শ্যামাইল গ্রামের তালুকদার পরিবারে ১৭৮১ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৯৯ সালে তিনি মক্কা গমন করেন এবং ১৮১৮ সালে বাংলায় ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি আরবের তৎকালীন ওহাবী আন্দোলনের অনুরূপ ইসলামি সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন। যা পরবর্তীকালে ফরায়েজী আন্দোলন নামে পরিচিতি পায়।
শরীয়তুল্লাহর সংস্কার আন্দোলন ছিল মূলত ধর্মীয়। কিন্তু সমাজের অন্যান্য বেশ কিছু দিকও এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। ইসলামি পুনরভ্যুদয়ের সমর্থক, একজন সমাজ সংস্কারক এবং একজন জনপ্রিয় কৃষক নেতা হিসেবে তাঁকে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এ সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কুশাসন, শোষণ ও অত্যাচারে বাংলার জনগণ অতিষ্ট ছিল।
১৭৯৯ সালে ১৮ বছর বয়সে মক্কা গমনের সময় বাংলার জনগণ ছিল নীলকরদের দ্বারা মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতিত। নীলকরদের পাশাপাশি সংঘবদ্ধ মাড়োয়ারি সম্প্রদায় ১৭৯৩ সালে প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে বড় বড় জমিদারি ক্রয় করতে থাকে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ব্যবসায় নিয়োজিত গোমস্তাগণ ছিল মধ্যস্থতাকারী তৃতীয় গ্রুপ। এরা ছিল প্রধানত মাড়োয়ারি এবং তাদের বাঙালি সহযোগিগণ। এই গোমস্তাদের ছিল সারা দেশের হাট-বাজার ও নদী-বন্দরের ওপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। যৌথভাবে পরিচালিত হিংস্রতা ও অত্যাচার মানুষজনকে মধ্যযুগীয় ইউরোপের ক্রীতদাসদের পর্যায়ে উপনীত করে। এই ভয়াবহ সামাজিক পরিবর্তন তৎকালীন ইংরেজ পুলিশ কমিশনারের বার্ষিক রিপোর্টে ‘ঘৃণ্য বিপ্লব oathsome revolution') হিসেবে আখ্যাত হয়েছে।
১৮১৮ সালে শরীয়তুল্লাহ দেশে ফিরে আসেন। মক্কায় তৎকালীন বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদদের তত্ত্বাবধানে প্রায় দুই দশক তিনি ধর্ম শিক্ষা ও আরবি সাহিত্য অধ্যয়ন করেন। তিনি একটি ভাল ও সম্মানজনক ভবিষ্যৎ জীবনের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন। ১৭৯৯ থেকে ১৮১৮ সাল পর্যন্ত আরবে তাঁর অবস্থানকালে সৌদি শক্তির উত্থান ও পতন এবং ‘মাওয়াহিদুন’ বিপ্লব অর্থাৎ তথাকথিত ওহাবীবাদের চূড়ান্ত বিকাশ ঘটে। খেদীব মুহম্মদ আলীর পুত্র ইবরাহিম পাশার নেতৃত্বে মিশরীয় অভিযানের মাধ্যমে সৌদি শক্তি পরাভূত হয়। কিন্তু ইসলামি পুনরুজ্জীবনের বিপ্লবী ধর্মীয় উদ্দীপনা আরবদের হূদয়কে সজীব করে তোলে। এই পুনরুজ্জীবনের উদ্দীপনা সঙ্গে নিয়ে শরীয়তুল্লাহ ফিরে আসেন এবং বাংলায় তা প্রবর্তনের চেষ্টা করেন।
কিন্তু প্রাক-ইসলামি যুগের বহু ঈশ্বরবাদের আরবে তিন পুরুষ স্থায়ী আদি ইসলামকে ইসলামি পুনরভ্যুত্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। তেরো শতক থেকে সুফিদের ধর্ম প্রচারণার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলাম বিস্তার লাভ করে। সুফিগণ মনে ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ইতিবাচক মনোভাবের দ্বারা এ প্রক্রিয়া সক্রিয় ছিল। তথাকথিত ওহাবী-সুন্নীদের ভুল বোঝাবুঝি ও বিবাদের মূল কারণ ছিল এই ব্যতিক্রমী দৃষ্টিভঙ্গি।
১৮১৮ সালে হাজী শরীয়তুল্লাহর জীবনের ব্রত ব্যর্থ প্রমাণিত হয়। তাঁর মৌল মতবাদের প্রচারণা জনসাধারণকে আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়। শিক্ষকদের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে তিনি পুনরায় মক্কা গমন করেন। তিনি শিক্ষক তাহের সোম্বলের নিকট সুফিবাদের কাদেরিয়া তরিকায় দীক্ষিত হন এবং ১৮২০ সালে পুনরায় বাংলায় ফিরে আসেন। এ পর্যায়ে ফরায়েজী নামে পরিচিত তাঁর সংস্কার আন্দোলন দূর-দূরান্তে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং হাজী শরীয়তুল্লাহর জীবদ্দশায় ফরিদপুর ছাড়াও বৃহত্তর ঢাকা, বরিশাল ও কুমিল্লা জেলায় দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
‘তওহীদ’ বা আল্লাহর একত্বের ওপর বিশ্বাস স্থাপন এবং একত্ববাদকে নির্ভেজাল রূপের ওপর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সঃ)-এর প্রবর্তিত নয় এমন সব স্থানীয় আচার-অনুষ্ঠানকে তিনি ‘শিরক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। দ্বিতীয়ত তিনি ইসলামের অবশ্য পালনীয় ধর্মীয় কর্তব্য বা ‘ফরজ’ পালনের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। যেমন, দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ধর্মীয় কর বা ‘যাকাত’ প্রদান করা, রমজান মাসে ‘রোজা’ রাখা,‘হজ্জ’ পালন করা ইত্যাদি। এ থেকেই হাজী শরীয়তুল্লাহর আন্দোলন ‘ফরায়েজী আন্দোলন’ নামে পরিচিত হয়। এছাড়াও তিনি সকল মুসলমানের ভ্রাতৃত্ববোধ ও একতা এবং সকল মানুষের সমতার ওপর জোর দেন। তিনি মুসলিম সমাজ দূষণকারী শ্রেণি বৈষম্যের নিন্দা করেন। অ-মুসলিম প্রতিবেশীদের প্রথা-পদ্ধতির সংক্রমণ দ্বারা মুসলিম সমাজে ধীরে ধীরে যে অনৈসলামিক রীতি-নীতি, আচার-ব্যবহার এবং বহু ঈশ্বরবাদী ধ্যান-ধারণার বিস্তার ঘটে, তিনি সেগুলিরও তীব্র নিন্দা করেন। আরবের ওহাবী সংস্কার অনুসরণে তিনি উপমহাদেশের মুসলমানদের জনপ্রিয় সামাজিক রীতি-নীতি হিসেবে আজও বিদ্যমান ‘ফাতিহা’, ‘ওরস’ এবং ‘মীলাদ মাহফিল’ আয়োজনেরও নিন্দা করেন। তিনি এগুলিকে ‘বিদাত’ হিসেবে চিহ্নিত করে দূর করার চেষ্টা করেন। এই পরিস্থিতিতে ১৮৩১ সালের দিকে মুসলিম সমাজের পক্ষ থেকে হাজী শরীয়তুল্লাহর আন্দোলনের বিরুদ্ধে রক্ষণশীল প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়, যার ফলে ঢাকা জেলাস্থ নয়াবাড়িতে তখন দাঙ্গা সংঘটিত হয়।
‘হেদায়া’তে উল্লিখিত মুসলিম আলেমদের শরীয়া অনুসারে তিনি ব্রিটিশ ভারতকে ‘দার-উল-হারব’ (শত্রু রাষ্ট্র) হিসেবে ঘোষণা দেন। দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার অক্ষমতা থেকে তিনি এই মর্মে ফতোয়া প্রদান করেন যে, মুসলিম শাসনের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের মুসলমানগণ সমবেতভাবে জুম্মা ও ঈদের নামাজ আদায় থেকে বঞ্চিত। রক্ষণশীল আলেমদের মধ্যে এটি প্রবল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে এবং তাঁরা এ সকল অনুষ্ঠান উদ্যাপন করা অব্যাহত রাখেন। তারা আশঙ্কা করেন যে, এগুলি বিলুপ্ত হলে মুসলিম সমাজে অনৈক্য, অমিল দেখা দিবে এবং তাতে মুসলমানদের পতন হতে পারে। তাঁর সমসাময়িক ধর্ম প্রচারক মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী এ বিষয়ে শরীয়তুল্লাহর প্রবল বিরোধিতা করেন এবং বাংলার ‘খারিজি’ হিসেবে তাঁকে অভিযুক্ত করেন।
কুরআনের নির্দেশ অনুসারে নিজস্ব সংগ্রামের ফল ব্যতীত মানুষের আর কিছুই নেই, তাই আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ঘোষণা করা হয় যে, যিনি জমি চাষ করেন তার উৎপাদিত ফসলের ওপর চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে সৃষ্ট জমিদারদের কোন অধিকার নেই। হাজী শরীয়তুল্লাহ তার অনুসারীদেরকে নির্দেশ দেন যে, হিন্দু প্রতিবেশীদের বহু ঈশ্বরবাদী পূজা উৎসবে অংশ নেওয়া যাবে না। জমিদার কর্তৃক তাদের ওপর আরোপিত কোন ধরনের ফসলী-করও প্রদান করা যাবে না। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আইনানুগ রাজস্বই কেবল প্রদান করা যাবে। এই নীতি সদ্য সৃষ্ট হিন্দু ভূ-স্বামিগণকে শরীয়তুল্লাহর আন্দোলনের বিরোধিপক্ষ হিসেবে প্রকাশ ঘটায়। হিন্দু ভূ-স্বামিগণ কৌশলে রক্ষণশীল মুসলিম কৃষকসহ তাদের পৃষ্ঠপোষক শক্তিসমূহকে একত্রিত করেন এবং নীলকরদেরকেও তাদের অন্ত
র্ভুক্ত করেন। এভাবে ১৮৪০ সালের দিকে উভয় পক্ষ ক্রমশ সংঘর্ষের দিকে এগিয়ে যায়। এ অবস্থায় ১৮৪০ সালে হাজী শরীয়তুল্লাহ মারা যান এবং তাঁর পুত্র দুদু মিয়া ফরায়েজীদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।

নড়িয়া উপজেলা নামকরণের ইতিহাস

বর্তমান অবস্থান: নড়িয়া শরীয়তপুর জেলার অন্যতম প্রখ্যাত উপজেলা। জেলা শহর হতে প্রায় ১৪ কিঃমিঃ উত্তর পূর্বে নড়িয়া অবস্থিত । ভৌগলিকভাবে ২৩.১৪ ডিগ্রী হতে ২৩.২৫র্ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০.১৮ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এর অবস্থান। উপজেলাটির উত্তরে পদ্মা নদী ও মুন্সিগঞ্জ জেলা দক্ষিণে ভেদরগঞ্জ ও শরীয়তপুর সদর উপজেলা ও জাজিরা উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত।
নামকরণের ইতিহাস: নড়িয়া উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি । নদী বিধৌত এলাকা বলে প্রতিবছর এর আয়তন স্থানান্তরিত হয়ে পড়ত। অর্থাৎ এর অবস্থান নড়ে যেত বা নইরা যেত। আঞ্চলিক উচ্চারণে নইরা থেকে নইরা<নৈরা<নরিয়া<নড়িয়া নামকরণ হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।তবে কথিত আছে নড়িয়া নামক এক বিরাট মৌজার নামানুসারেই উপজেলার নামকরণ নড়িয়া করা হয় ।
নড়িয়া প্রথমে থানার রুপ নেয় ১৯৩০ সালে । ১৯৮৩ সালের ১লা আগষ্ট নড়িয়া উপজেলায় রুপান্তরিত হয় । উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালিন খাদ্য মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল এজি মাহমুদ ।
এখানকার জনসাধারণের প্রধান জীবিকা কৃষি হলেও ব্যবসা, সরকারী বেসরকারী চাকুরী, কামার, কুমার, কুটির শিল্প সম্প্রদায়ের বহু লোক এখানে বাস করে । এছাড়া এ উপজেলায় প্রায় ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) লোক ইতালী, মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের নানা দেশে কর্মরত আছেন। প্রচুর রেমিটেন্স দেশে প্রেরণ করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নামকরণের ইতিহাস

ভেদরগঞ্জ এর নামকরন নিয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
প্রথমত, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব বিক্রমপুর পরগনার জমিদার ভেদার উদ্দিন ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে এই এলাকার সফরে আসেন এবং এই সৈয়দ ভেদার উদ্দিন শাহের প্রয়াসে ভেদরগঞ্জ থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। তার নামানুসারেই ভেদরগঞ্জ এর নামকরন করা হয়। উল্লেখ্য যে ভেদরগঞ্জ এক সময় ভেদার উদ্দিন শাহ এর জমিদারী এলাকার অন্র্তগত।
দ্বিতীয়ত, ভেদরগঞ্জের নামকরন নিয়ে আরো একটি প্রবাদ আছে। এই প্রবাদ কাদা প্রবাদ নামে পরিচিত । ‘ভেদর’ শব্দের অর্থ কাদা। একসময় এই এলাকায় প্রচুর কাদা ছিল। কাদার জন্য মানুষের হাটা চলার ব্যঘাত ঘটত। তাই এই এলাকার নাম একে একে জনমুখে ভেদরগঞ্জ নামের পরিচিতি লাভ করে।
তৃতীয়ত, অনেকের মতে, এই এলাকায় প্রচুর বেদে ছিল। নদীর পাড়ে সবসময় অসংখ্য বেদে বহর থাকত। তাই এই এলাকার নাম ভেদরগঞ্জ হয়েছে।
আধুনিক গবেষণায় প্রবাদ দুটি নিছক প্রবাদ বলে প্রতিয়মান হয়েছে।মুলত ভেদার শাহ এর নাম হতে ভেদরগঞ্জ নামের উৎপত্তি। বর্তমানে ভেদরগঞ্জ নামে প্রচলিত হলেও বিভিন্ন সময় এর নাম বেদেরগঞ্জ, ভেদেরগঞ্জ,ছিল।

ডামুড্যা উপজেলা নামকরণের ইতিহাস

এক সময়ে তৎকালীন মাদারীপুর মহকুমার বিখ্যাত বাংলা কবি নবীন চন্দ্র সেন মহকুমা প্রশাসক ছিলেন। নবীন চন্দ্র সেনের আমন্ত্রণে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর একদা মাদারীপুর সফরে এসেছিলেন এবং মাদারীপুর হতে নবীন চন্দ্র সেনের সাথে বর্তমান ডামুড্যা সফরেও আসেন। ডামুড্যার পূর্ব পাশের নদী তৎকালীন ভারতের দামোদর নদীর মতো ক্ষীপ্ত ছিল। ঈশ্বার চন্দ্র বিদ্যাসাগর বলেছিলেন এই নদী দামোদর নদীর মত। এই নদী সাঁতার দিয়ে বিদ্যাসাগর মায়ের সাথে দেখা করতে যেতেন। কারণ বিদ্যাসাগরের খেঁয়ার পয়সার অভাবে সাঁতার কেটে মাকে দেখতে যেতে হতো। এই কথা শুনে মহকুমা প্রশাসক নবীন চন্দ্র সেন বিদ্যাসাগরের সম্মানে এই এলাকার নাম রাখেন দামোদর।
দামোদর শব্দের একটি অর্থ পবিত্র জল।
হিন্দু বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ দেবতা বিষ্ণুর একটি নাম দামোদর। হিন্দু ধর্মে আছে- দমের দ্বারা যিনি উচ্চস্থান পাইয়াছেন, তিনিই দামোদর। বেদে আছে, বিষ্ণু তপস্যা করিয়া বিষ্ণুত্ব লাভ করিয়াছেন, নহিলে তিনি ইন্দ্রের কনিষ্ঠ মাত্র। শঙ্করাচার্য দামোদর শব্দের অর্থ গ্রহণ করিয়াছেন। তিনি বলেন, “দমাদিসাধনেন উদরা উৎকৃষ্টা গতির্যা তয়া গম্যত ইতি দামোদরঃ।” মহাভারতেও আছে, “দমাদ্দামোদরং বিদুঃ।” তবে এর সাথে ডামুড্যার দামোদর নদীর কোন সম্পর্ক আছে কিনা তা ইতিহাসে উল্লেখ নাই।
তাই আঞ্চলিক উচ্চারণে দামোদর> দামোদরিয়া > ডামুদিয়া >ডামুড্যা নাম ধারণ করছে।
যে মৌজার পাশ দিয়ে দামোদর প্রবাহিত হতো তাকে বলা হতো ডামুড্যা। ঐ মৌজার নামানুসারে পরবর্তীতে এ জনপদের নাম হয় ডামুড্যা।
১৮৭৪ সালরে কলিকাতা গেজেটে ডামুড্যা থানার নাম থাকলেও তার শতর্বষ পরে প্রকাশিত ফরিদপুর জেলা গেজেটিয়ারে মাদারীপুর মহকুমার ০৯ টি থানার মধ্যে ডামুড্যা থানার নাম নেইে। ১৯৭৫ র্পুবতন ভেদেরগঞ্জ ও গোসাইরহাট থানার কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
উত্তর দিকে - ভেদরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণ দিকে - গোসাইরহাট উপজেলা, পূর্ব দিকে -গোসাইরহাট উপজেলা, পশ্চিমে - শরীয়তপুর সদর উপজেলা অবস্থিত।

জাজিরা উপজেলা নামকরণের র্ইতিহাস


শরীয়তপুর জেলার অন্যতম জাজিরা উপজেলা ।
নামকরণ: জাজিরার নামকরন সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন তথ্য জানা নেই। জাজিরা মুলত পদ্মা নদীর একটি চর। আরবিতে জাজিরা جزيرة অর্থ- দ্বীপ। এ শব্দ হতেই পূরোনো যুগের কোন মুসলিম নেতা এর নাম লিখেছিলেন মর্মে কথিত আছে। আরবী ভাষায় দ্বীপকে বলা হয় জাজিরা। দ্বীপ আর চরকে সমার্থক ভেবে ভুমি জরিপের সময় হয়তো জাজিরা নামে চিহ্নিত করা হয়েছে।.
জেলা সদর হতে ১২ কি.মি উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত। বিশ্ব মানচিত্রের ২৩.১৬ ও ২৩.২৭ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০.১৩ হতে ৯০.২৬ পূর্ব দ্রাঘিমার রেখার মধ্যে জাজিরা অবস্থিত।
1973 সালে প্রকাশিত ‘বাংলা বিশ্বকোষ’ গ্রন্থে মাদারীপুরের যে 09 টি থানার উল্লেখ রয়েছে তাতে জাজিরার নাম রয়েছে। ১৯৮৩ সালে ২৪মার্চ শহীদ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ বীরশ্রেষ্ঠ এর মাতা মোসাঃ মফিদুন্নিসা জাজিরা উপজেলা উদ্বোধন করেন।
আয়তন: ২৩৯.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৫´ থেকে ২৩°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৩´ থেকে ৯০°২৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলা, দক্ষিণে শরিয়তপুর সদর ও নড়িয়া উপজেলা, পূর্বে নড়িয়া উপজেলা, পশ্চিমে শিবচর ও মাদারীপুর সদর উপজেলা।

গোসাইরহাট উপজেলা নামের ইতিহাস

বাংলার শেষ নবাব সিরাজ উদ্দৌলার পতন মুহূর্তে যখন ইংরেজদের আগমন প্রায় নিশ্চিত কথিত আছে যে, তখন বর্তমান গোসাইরহাট থানার মূলগাঁও গ্রামটির নিকট ব্রহ্মনন্দ গিরি নামে এক সাধু বাস করতেন। লোকে তাকে ‘গোসাই’ নামে ডাকতেন। সহানীয় অনেকের ধারণা এ গোসাই হতেই গোসাইরহাট নামকরণ করা হয়েছে।
গোসাইরহাট এর ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ শালী। ১৯২১ সালে এখানে থানা স্থাপিত হয়। শরীয়তপুর জেলার সর্বদক্ষিণে গোসাইরহাট উপজেলা অবসিহত। তৎকালে ৭টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল এ গোসাইরহাট উপজেলা। বর্তমানে ৮টি ইউনিয়ন এ গোসাইরহাট উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। এ উপজেলার উত্তরে ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বরিশালের হিজলা-মুলাদী উপজেলা, পূর্বে চাঁদপুরের হাইমচর এবং পশ্চিমে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা।

সখিপুর থানা নামকরণের ইতিহাস

সখিপুর থানা নাম করণ সম্পর্কে তেমন কিছু খুজে পাওয়া যায়নি।
যতদুর পাওয়া যায় তাহলো -প্রাচীনকালে সখীপুর ত্রিপুরা রাজার অধিনে ভু-স্বামী নরসিংহ কর্তৃক শাসিত হত। ত্রিপুরা রাজার ঘনিষ্ঠ আত্নীয় ছিল নরসিংহ।প্রবাদে আছে চাঁদপুরের চাঁদ সুন্দরীর অন্যাতম এক সখিকে এ এলাকার তৎকালীন জমিদার পুত্র নরসিংহ বিয়ে করেছিলেন। এ জন্য এ এলাকার নাম সখিপুর হয়।
মুলত সখিপুর ইউনিয়ন ছিল একটি বড় গ্রাম যা ৪১ মতান্তের ৪৩ টি কান্দি নিয়ে গঠিত।

Trending Topic

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. শরীয়তপুর জেলাতথ্য - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Premium Blogger Template